শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

রোহিঙ্গাদের জন্য ২শ’ মিলিয়ন ডলারের নতুন তহবিল ঘোষনা

রোহিঙ্গা ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক দাতা সম্মেলন। এতে বিভিন্ন দেশ এবং দাতা সংস্থা তাদের নিজ নিজ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর যৌথভাবে ভার্চুয়াল ওই সম্মেলনের আয়োজন করে। রোহিঙ্গা সংকটের সবচেয়ে বড় ভিকটিম বাংলাদেশ এবং এ সংকটের উৎপত্তি ও সমাধান যেখানে নিহিত সেই মিয়ানমারও সম্মেলনে অংশ নেয়।সম্মেলনে যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পরিবেশ নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের ব্যাপক চেষ্টা সত্ত্বেও তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন না হওয়ার কারণে রোহিঙ্গারাও হতাশ। তারা জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। এর ফলে কালক্রমে তারা মানব পাচার, উগ্রবাদ, মাদক চোরাচালানসহ অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। সম্মেলনে সদ্য ঢাকা সফর করে যাওয়া মার্কিন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই-বিগান সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং অঙ্গীকার তুলে ধরেন।

দীর্ঘ বক্তৃতায় তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ সংকটের সৃষ্টি মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও সেখানেই নিহিত। সুতরাং মিয়ানমারকে এতে কার্যকরভাবে এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ এবং এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিগান বলেন, গোটা এশিয়া অঞ্চলের জন্য চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে জাতিসংঘের স্থায়ী ৫ সদস্যকে এক এবং অভিন্ন অবস্থান নিতে হবে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ২০০ মিলিয়ন ডলারের নয়া তহবিল প্রদানের ঘোষণা দেন মার্কিন তিনি।

এদিকে সম্মেলন শুরুর আগেই ৫২৩ কোটি টাকার সহায়তার নতুন ঘোষণা দেয় বৃটেন। বৃটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ মিনিস্টার ডমিনিক রাব এ ঘোষণা দেন। সেখানে তিনি চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের অবর্ণনীয় দুর্দশা থেকে এক মুহূর্তের জন্যও পলক না সরাতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিতে আয়োজিত দাতা সংস্থাগুলোর ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বৃটিশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন বৃটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ উইম্বলডন।

তিনিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের বক্তব্যের পুনরুল্লেখ করে রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক দৃষ্টি রাখতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আর্জি জানান। একই সঙ্গে বলেন, বৈশ্বিক দায় বিবেচনায় বৃটিশ সরকার রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষায় সর্বতোভাবে সাপোর্ট দিচ্ছে। বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেয়া আট লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে সুরক্ষা এবং করোনাভাইরাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াইয়ে বাংলাদেশকে বৃটেনের তরফে অতিরিক্ত ৪৭.৫ মিলিয়ন পাউন্ড (৫২৩ কোটি টাকা) সহায়তা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে ২০২০ সালে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে ৯৬ মিলিয়ন ডলার তহবিল সরবরাহের ঘোষণা দেয়া হয়। ওই অর্থের একটি অংশ উন্নয়ন সহযোগিতা এবং সংঘাত প্রতিরোধ বা কনফ্লিক্ট প্রিভেনশন সাপোর্ট হিসাবেও ব্যয় হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এছাড়া দাতা সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সমন্বয়ক মার্ক লোকক বলেন, দেশ ছাড়ার তিন বছর পরেও রোহিঙ্গারা এখন বিশ্বের সব থেকে বড় রাষ্ট্রহীন জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের সাহায্যে জাতিসংঘ এবং তার সহযোগীরা অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি এ সব দাতাকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই বাংলাদেশের সরকারকে। তবে আমাদের ভুলে যাওয়া চলবে না মিয়ানমারের মধ্যেও ছয় লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। যাদের মধ্যে এক লাখ ৩০ হাজার বাস্তুচ্যুত। এরমধ্যে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা দেখা দিয়েছে। বক্তব্যের শেষে তিনি বাংলাদেশ সরকার এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে ধন্যবাদ দেন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION